আল্লাহ্র কর্তৃত্ব ও প্রতিপালকত্বে বিশ্বাস স্থাপন
অর্থাৎ এ বিশ্বাসে অটল থাকতে হবে যে, আল্লাহ্ একমাত্র রব, একমাত্র প্রতিপালক। এই মহাবিশ্ব পরিচালনায় তার আর কোন অংশীদার বা সহযোগী নেই।
রব (رب) বলা হয় তাঁকে যিনি সৃষ্টি করেন, পরিচালনা করেন এবং মালিকানা যার জন্য।
সুতরাং – আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন স্রষ্টা নেই। আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন মালিক নেই। তিনি ছাড়া আর কোন বিশ্ব পরিচালকও নেই।
পবিত্র কোরানে অনেক জায়গায় এ ঘোষণা বারবার উচ্চারিত হয়েছে –
“জেনে রাখুন, সৃষ্টি করা ও হুকুমের মালিক তিনি।” [সূরা আ’রাফ ৭:৫৪]
“বলুন! তিনি কে, যিনি আসমান ও জমিন হতে তোমাদেরকে রিজিক পৌঁছিয়ে থাকেন? অথবা কে তিনি, যিনি কর্ণ ও চক্ষুসমূহের উপর পূর্ণ অধিকার রাখেন? আর তিনি কে, যিনি জীবিতকে মৃত থেকে আর মৃতকে জীবিত থেকে বের করে আনেন? আর তিনি কে, যিনি সমস্ত কার্যাদি পরিচালনা করেন? অবশ্যই তারা বলবে যে তিনি একমাত্র আল্লাহ্। সুতরাং আপনি বলুন, তবে কেন তোমরা তাঁকে ভয় করছ না।[সূরা ইউনুছ ১০:৩১]
“তিনি আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত সকল কার্য পরিচালনা করেন। তারপর তা একদিন তাঁর কাছেই উঠবে।”[সূরা হা-মীম সেজদা, ৩২:০৫]
“তিনিই আল্লাহ্, তোমাদের প্রতিপালক। সার্বভৌমত্ব একমাত্র তাঁরই। আর তোমরা আল্লাহ্র পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো, তারা তো খেজুর আঁটির উপরে পাতলা আবরণ বরাবর (অতি তুচ্ছ কিছুরও) মালিক নয়।”[সূরা ফাতির ৩৫:১৩]
আল্লাহ্ বিচার দিবসের মালিক
একটু মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন। সূরা ফাতিহায় আল্লাহ্ বলেছেন, مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ অর্থাৎ “তিনি বিচার দিবসের মালিক।” অন্য ক্বেরাতে এসেছে مَلِكِ يَوْمِ الدِّينِ অর্থাৎ “তিনি বিচার দিবসের রাজা বা বাদশাহ।” এই দুটি ক্বেরাতকে যদি আপনি একত্রিত করেন তাহলে চমৎকার একটি তাৎপর্য বেরিয়ে আসবে। রাজত্ব ও কর্তৃত্ব বুঝাতে “مَالِكِ” (অধিকর্তা) শব্দের চেয়ে “مَلِكِ” (রাজা) শব্দটি বেশী প্রাঞ্জল ও অর্থবোধক। কিন্তু কখনো কখনো “مَلِكِ” (রাজা) দ্বারা শুধু নামসর্বস্ব কর্তৃত্বহীন রাজাকেও বুঝানো হয়। অর্থাৎ সে “مَلِكِ” বা বাদশাহ-ই কিন্তু তার হাতে কোন কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা না থাকায় তাকে “مَالِكِ” বা অধিকর্তা বলা যায় না। এজন্য দুই ক্বেরাতের “مَالِكِ” ও “مَلِكِ” শব্দদ্বয় একত্র করলে আল্লাহ্র জন্য রাজত্ব ও কর্তৃত্ব দুটোই নির্ধারিত হয়ে যায়।