তাকলিদ কাকে বলে?
তাকলিদ অর্থঃ ঐতিহ্য একটি ইসলামি আইনি পরিভাষা।
এ শব্দটি (আরবি: قلادة) থেকে এসেছে যার অর্থ কণ্ঠহার বা রশি। যেমন বলা হয় قلد البعير সে উটের গলায় রশি বেধেছে। আরবিয় ডিকশনারি অনুযায়ী কোন ব্যক্তির কথা বিনা প্রমাণে মানার নাম তাকলিদ [1]।
তাকলিদ পারিভাষিক অর্থে বর্তমানে বোঝায় মুজতাহিদের কথা বিনা দলিলে অনুসরণ করা। যে ব্যক্তি তাকলিদ করে তাকে মুকাল্লিদ বলা হয়।
কোনো ব্যক্তি যখন সরাসরি কুরআন-হাদীস থেকে বিধি-বিধান জানার মত জ্ঞান রাখেন না তখন কোনো মুজতাহিদের মতের অনুসরণ করেন অর্থাৎ তাকলিদ করেন।
মাযহাব
বর্তমানে মুসলিমদের মধ্যে চারটি প্রধান মাজহাব রয়েছে। এগুলো হল হানাফি, শাফি, মালিকি, হাম্বলি। এগুলোর প্রত্যেকটি পৃথক চারজন মুজতাহিদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। মাযহাবের অনুসরণ বলতে উক্ত মাযহাবগুলোর মুজতাহিদদের মতের অনুসরণ বুঝানো হয়।
অবশ্য কেউ যদি জ্ঞান অর্জন করে মুজতাহিদ স্তরে পৌঁছুতে পারেন তাহলে তিনি কারো তাকলিদ না করে সরাসরি নিজে কুরআন হাদিস থেকে বিধান আহরণ করে চলতে পারবেন এবং তখন অন্য সাধারণ মানুষরা তাকে অনুসরণ করতে পারবে।
তাকলিদি পদ্ধতির সূচনা
এই তাকলিদি পদ্ধতির সূচনা হয় ৪০০ হিজরির পরে বিশেষজ্ঞরা এই মত দিয়েছেন[2]।
ইজতিহাদ ও তাকলিদ
শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী স্বীয় গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’তে এবং কাজী সানাউল্লাহ পানিপতি তাঁর তাফসীরে মাযহারীতে বলেন, যে সকল ব্যক্তির ইজতিহাদ করার ক্ষমতা রয়েছে, তাদের জন্য কোন ব্যক্তি বা মাজহাবের তাকলিদ করা জায়েজ হবে না।[3]
শাহ ওয়ালীউল্লাহ বলেন,
যিনি কোনো একটি বিষয়েও ইজতেহাদ করার মত যোগ্যতা অর্জন করবেন, তার পক্ষে সে বিষয়ে অপরের অন্ধ তাকলীদ করা হারাম।
Social Media
Facebook | Twitter | Youtube | pdf Book
- আল মুজা’মুল ওয়াসীয়ত পৃঃ৭৫৪, আল কামুউস আল ওয়াহীদ পৃঃ১৩৪৬, মিসবাহুল লুগাত পৃঃ৭০১, হাসানুল লুগাত ফারসী পৃঃ২১৬। ↩︎
- হুজ্জাতিল্লাহিল বালিগাহ, শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দীস দেহলভী ↩︎
- আলী, মুহাম্মদ মুয্যাম্মিল। “আনুগত্য ও অনুসরণের উপাসনা (عبادة الطاعة والاتباع)”। www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০২২। ↩︎